বইটির বিবরণ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ছােটগল্পকে চিরাচরিত ঢং থেকে বাইরে এনে একটি আলাদা মাত্রা দিয়েছেন। বিশ্ব সাহিত্যে হাতে গােনা যে ক’জন গল্পকার আছেন রবীন্দ্রনাথ তাদের মধ্যে অন্যতম। বিশেষ করে তার অতিপ্রাকৃত গল্পগুলাে তাকে বাংলা সাহিত্যে অন্য এক মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। এসব গল্পে তিনি এক ভিন্ন জগতের দ্বার উন্মােচন করেছেন; যেখানে মানুষের নানা পাওয়া না পাওয়া, বেদনা, আশানিরাশার কথা মূর্ত হয়েছে। এসব গল্পে মানুষের লুকিয়ে থাকা বিচিত্র মানবিক গুণাবলি ও চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। মানুষের অন্তর্জগতে ঘটে যাওয়া রহস্যে মােড়ানাে নানা ধরনের ঘটনা পরম্পরার সঙ্গে সে নিজেও কোনাে না কোনােভাবে জড়িয়ে যায়। আর এসবের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ উঠে এসেছে তাঁর অতিপ্রাকৃত গল্পে।
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যে সব সময়ই ঘুরেফিরে উঠে এসেছে সমাজের নানা শ্রেণির মানুষদের জীবন কথা। রবীন্দ্রনাথ তাঁর লেখালেখি নিয়ে বার বার যে কথাটি বলতে চেয়েছেন তা হলাে তা আমার সাহিত্যে দুটি আকাঙ্খা থাকে তা হলাে সুখদুঃখ বিরহ মিলন পূর্ণ মানব সমাজে প্রবেশের আকাঙ্খা আবার, নিরুদ্দেশ সৌন্দর্যলােকে উধাও হইয়া পড়িবার আকাঙ্খা। মূলত তাঁর গল্পের বিশাল ভুবনে তিনি তৈরি করেছেন নানা অনালােকিত অধ্যায়ের যেখানে আমাদের মনের না বলা আবেগ, অনুভূতি চমক্কারভাবে ধরা দিয়েছে।