বইটির বিবরণ
শিল্পী এস এম সুলতান জীবনের প্রথম ধাপেই কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। তাঁর জীবনের যত গল্প ও কাহিনি তাঁকে কেন্দ্র করেই। সুলতানের বর্ণাঢ্য ও বিচিত্র জীবনযাপনের পরতে পরতে গল্প, আবার কখনো তিনি নিশ্চুপ অথবা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, সে সময় তিনি কোথায় আছেন, কী করেছেন- আমরা জানি না। সুলতানের ব্যক্তিজীবন ছিল কুহেলিকাময়, নানা চিত্র-বিচিত্র গল্পে আচ্ছন্ন। একাকী ঘুরেছেন সাতচল্লিশ পূর্ববর্তী ভারতবর্ষের নানা স্থানে। কোথাও স্থায়ী হননি। বর্ণাঢ্য ও বিপুল অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনকাহিনিকে করেছে সকলের কাছে আরাধ্য ও কৌতূহলী। তাঁর শিল্পকর্ম পাঠ করলে সাধারণ দর্শকরা স্থির থাকতে পারেন না। তাঁর ছবির অন্তর্গত দর্শন বিপুল জনসমর্থন পেয়েছে শিল্পীর জীবৎকালে। এমন বৈচিত্র্যময় ও আলো-আঁধারের জীবনকে পুনর্পাঠ করা জরুরি। আলোকচিত্রশিল্পী নাসির আলী মামুনের সঙ্গে দীর্ঘকাল সুলতানের গভীর হৃদ্যতা ও বন্ধুত্বর কারণে তাঁর জীবনের বহু অজানা গল্প আলোকচিত্রীকে বিভিন্ন সময়ে বলেছেন যা নাটকীয়, কখনো কখনো অলৌকিক। শিল্পী সুলতানের না-বলা কাহিনি এখানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এটি সুলতান জীবনী নয়, উপন্যাস। সুলতানের কাছে থেকে শোনা কাহিনি পরম যত্নের সাথে লেখক উপন্যাস আকারে উপস্থাপন করেছেন। এই উপন্যাসে বর্ণিত তাঁর জীবনের সত্য, অবিশ্বাস্য এবং শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনাপ্রবাহ পাঠকদের শেষ পর্যন্ত পাঠ করতে আগ্রহী করবে।
লেখকের পরিচিতি
প্রায় পাঁচ দশক নাসির আলী মামুন সৃজনশীল এবং খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের বিভিন্ন দুর্লভ মুহূর্ত ক্যামেরায় বন্দি করে চলেছেন। তাঁর শিল্পিত স্পর্শে আলোকচিত্রগুলো যেন মূর্ত হয়ে ওঠে। দেশে ও বিদেশে এযাবৎ ৫৯টি একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী করেছেন তিনি। ‘ঘর নাই’ শিরোনামে তাঁর ভিন্নধর্মী লেখাগুলো দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় ২৫ মার্চ, ২০০০ থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকলে তা অসংখ্য পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে। এই গ্রন্থে সেই লেখাগুলো থেকে ৪০টি প্রকাশিত হলো। এই বরেণ্য শিল্পীর জন্ম ১৯৫৩ সালের ১ জুলাই, ঢাকায়।