বইটির বিবরণ
নেমুরেরু বিজোও নামে মূল উপন্যাসিকাটি প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। প্রাণিজগতে বিবর্তনের পথ ধরে মনুষ্যপ্রজাতির উদ্ভব হওয়ার সময়, তার চেতনার মূল অবলম্বন ছিল যে প্রত্ন-মন, সেটিকে সে আজও বহন করে চলেছে। জন্মাবধি ব্যক্তিমানুষের প্রতিটি মুহূর্তের অভিজ্ঞতা এক জটিল পথে গড়ে তোলে তার অবচেতন মন, যার নির্দেশে নির্ধারিত হয় তার প্রতিক্রিয়া। আর সচেতনে স্মৃতিতে ধারণ করা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যে বিবেচনার অধিকারী হয়, ভাষার মাধ্যমে সামাজিকভাবে তা বিনিময়ের প্রয়াস পেতে পারে। ভাষার যুক্তিগত কাঠামো তুলনায় সরল ও সুনির্দিষ্ট, তার ভিত্তি সামাজিক পরিসরে জীবনের সুস্পষ্ট অভিজ্ঞতা। এই উপন্যাসিকায় প্রবীণ এগুচির মৃত্যুচেতনা, দৈহিক কামনা, স্মৃতি আর সৌন্দর্যের আকর্ষণে সৃষ্ট নানা সম্পর্কের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ কাহিনীতে উন্মোচিত হতে থাকে। যে পথে মানুষের প্রত্ন-মন, অবচেতন মন ও সচেতন মন একযোগে ক্রিয়াশীল হয়ে মানুষটির পক্ষপাত, প্রতিক্রিয়া ও উদ্যমের জন্ম দেয় তা রহস্যাবৃত। সেই প্রক্রিয়ার বিকাশকে অনুমান, অনুভব ও পর্যবেক্ষণ করার দুঃসাহস কোনো লেখক অর্জন করলেও, অনুধাবনের অভ্যস্ত প্রক্রিয়াকে আশ্রয় দিতে পারার মতো সময়ানুক্রমিক, সুসম্বন্ধ কাঠামোর বাক্যে তাকে প্রকাশ করা দুরূহ, পরিস্থিতি বিশেষে অসম্ভব। তবু সৌন্দর্যচেতনা ও সৌন্দর্যলিপ্সার কেন্দ্রে ক্রিয়াশীল এক সুপ্ত উৎকণ্ঠার হদিস, মনস্তত্ত্বের গভীরতর সব তলের দার্শনিক কাওয়াবাতার এই উপন্যাসিকা।
লেখকের পরিচিতি
১৯৬৮ সালে সাহিত্যে নােবেল বিজয়ী প্রথম জাপানী লেখক ইয়াসুনারি, কাওয়াবাতার জন্ম ১৮৯৯ সালে জাপানের ওসাকায়। তার প্রথম আর যখন প্রকাশিগল্প যখন প্রকাশিত হয় তখন তিনি হাইস্কুলের ১৯২৪ ছাত্র। ১৯২৪ সালে টোকিও ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গ্রন্থ “দ্য ইজো ড্যান্সার”। অধিকাংশ উপন্যাসেই মানুষের জীবন এবং সৎ জীবন এবং সংস্কৃতিতে যৌনতার বিষয়টিকে তিনি শৈল্পিক দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। তার লেখনীতে জাপােলখনীতে জাপানের প্রাচীন ঐতিহ্য এবং আধুনিক ভাবধারার, বাস্তবতা এবং কল্পনার অদ্ভুত মিশেল লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজি ভাষায় রূপান্তরিত তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থসমূহ হলাে: স্নো কান্ট্রি (১৯৫৬), থাউজ্যান্ড ক্রেনস ১৯৫৯), দ্য সাউন্ড অব দ্য মাউন্টেইন (১৯৭০), দ্য মাস্ট (১৯৭০), দ্য মাস্টার অব গাে (১৯৭২) বিউটি ভাড় স্যাডনেস অ্যান্ড স্যাডনেস (১৯৭৫)। ১৯৭২ সালে কাউয়াবাতা আত্মহ কাওয়াবাতা আত্মহত্যা করেন।
অনুবাদকের পরিচিতি